শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৭ অপরাহ্ন

বনানীতে চিরনিদ্রায় ড. ইনামুল হক

বনানীতে চিরনিদ্রায় ড. ইনামুল হক

স্বদেশ ডেস্ক:

একুশে পদকপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান অভিনেতা ড. ইনামুল হককে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে। আজ দুপুর ২টা ২০ মিনিটে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রয়াতের জামাতা অভিনেতা সাজু খাদেম।

এর আগে, শেষবিদায় জানাতে এই বর্ষীয়ান অভিনেতার মরদেহ নেওয়া হয় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, কেন্দ্রীয় শাহীদ মিনার ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট)।

শিল্পকলা আয়োজনটি হয় গতকাল সন্ধ্যা। আর পরের দুটি আয়োজন আজ সকাল ও দুপুরে হয়েছে। সকাল ১১টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার মরদেহ নিয়ে এলে বিভিন্ন স্তরের সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ফুল দিয়ে তাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় শ্রদ্ধা জানান তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাট্যজন নাসির উদ্দিন ইউসুফ, আবুল হায়াত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান, অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি, তানজিকা আমিন, নাতাশা হায়াত, মোমেনা চৌধুরী, নাট্যকার বৃন্দাবন দাস, অভিনেতা মীর সাব্বির, ফারুক আহমেদ, নির্মাতা অরণ্য আনোয়ার, পিকলু চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অসীম কুমার উকিল ও সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ বেতার-টেলিভিশন শিল্পী সংস্থা বাঙালি সাংস্কৃতিক বন্ধন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপকমিটি, বাংলাদেশ মহিলা সমিতি, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, টেলিভিশন নাট্যকার সংঘ, ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য অভিনেতা-নাট্যকার ড. ইনামুল হক গতকাল দুপুরে বেইলি রোডের নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। জানা যায়, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন।

উল্লেখ্য, ড. ইনামুল হকের অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৬৮ সালে। তার প্রথম অভিনীত টেলিভিশন নাটক ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’। এটি প্রযোজনা করেন মুস্তাফা মনোয়ার। নাট্যকার হিসেবে তার পথচলা শুরু ওই বছরই। তার প্রথম লেখা নাটকের নাম ‘অনেকদিনের একদিন’। আবদুল্লাহ আল মামুন নাটকটি প্রযোজনা করেছিলেন টেলিভিশনের জন্য।

এ পর্যন্ত টেলিভিশনের জন্য ৬০টি নাটক লিখেছেন তিনি। তার লেখা আলোচিত টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘সেইসব দিনগুলি’ (মুক্তিযুদ্ধের নাটক), ‘নির্জন সৈকতে’ ও ‘কে বা আপন কে বা পর’। মঞ্চের জন্য প্রথম লেখা নাটকের নাম ‘বিবাহ উৎসব’। এটি লিখেছিলেন উদীচীর জন্যে। তার নিজ দল নাগরিক নাট্যাঙ্গনের জন্য প্রথম লেখা নাটকের নাম ‘গৃহবাসী’। ১৯৮৩ সালে লেখা হয় নাটকটি। ঢাকার মঞ্চে বেশ আলোচিত নাটক এটি।

গুণী এই অভিনেতার পুরো পরিবারই নাটকের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তার স্ত্রী লাকী ইনামও কিংবদন্তি অভিনেত্রী। মেয়ে হৃদি হকও নির্দেশক এবং অভিনেত্রী। তার জামাই অভিনেতা লিটু আনাম। ড. ইনামুলের অপর মেয়ে প্রৈতি হকের স্বামী সাজু খাদেম।

নাটক-আত্মজীবনী লেখা, বই পড়া ছাড়াও বাসায় নাতি-নাতনিদের সঙ্গে গল্প করেও সময় পার করতেন ড. ইনামুল হক। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘পড়ার জন্য কত বই রয়েছে! লেখার কতো কী বাকি! অনেক কিছুই বাকি রয়ে গেল!’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877